মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের কালকিনিতে নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে মোসা. সাজেদা নাসরিন নামের একজন পুলিশের এ.এস.আই ও তার স্বামী মো. বাবুল আকনসহ দুই জনের নামে সরকারি (খাস) জমির চান্দিনা ভিটি বরাদ্ধ নিয়ে বহুতল বভন নির্মান করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওই বহুতল ভবন উচ্ছেদের জন্য এরইমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন। বাবুল আকন কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের কালাইরচর গ্রামের রশিদ আকনের ছেলে ও তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং পুলিশের এএসআই সাজেদা নাসরিন বাবুল আকনের স্ত্রী।
প্রশাসন ও নোটিশ সুত্রে জানা গেছে, ওই পুলিশের এ.এস.আই ও তার স্বামীসহ দুইজনের নিজ নামে কয়েক বছর পূর্বে উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজারে সরকারি (খাস) জমির দুইটি চান্দিনা ভিটি বরাদ্দ নেয়। পরে তাদের নামে বরাদ্ধকৃত জমির উপরে একটি বহুতল বভন নির্মান কাজ শুরু করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্বামী। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে লিখিতভাবে কয়েকদফা বভনের কাজ বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ প্রদান করা হলেও তা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মান করেন। তবে ওই সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মানাধীন বহুতল ভবন উচ্ছেদ করে সরকারি জমি দখল মুক্ত (পুনরুদ্ধার) করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। এদিকে ওই অবৈধভাবে নির্মান করা ভবন ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহন করায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী মো. এমদাদ প্যাদা, মোঃ কালাম সরদার ও সেকান্দার শিকদারসহ বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি বলেন, বাজারে চান্দিনা ভিটি বরাদ্দ নিয়ে বহুতল বভন নির্মান করেছেন পুলিশের এস.আই সাজেদা নাসরিন ও তার স্বামী মোঃ বাবুল আকন। এখন ওই ভবন ভাঙ্গার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন প্রশাসন। তাই আমরা আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এই ভবন ভাঙ্গলে অন্য কোন লোকজন এভাবে অবৈধ ভবন করতে সাহস পাবেনা।
অভিযুক্ত বাবুল আকন বলেন, সরকারের প্রয়োজন হলে সকল অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ করতে পারে। আমি নয়, বাজারে অনেক ব্যবসায়ীই আছে যারা সরকারি জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে। আমার একার ভবন নয়, সবার ভবনই ভাঙ্গা উচিৎ।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, খাসেরহাট বাজারে বাবুল আকন ও তার স্ত্রীর অবৈধভাবে নির্মান করা বহুতল ভবন ভাঙ্গার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করছেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন স্যার। তবে ওই ভবন ভাঙ্গার জন্য আগামী ১৭ তারিখ নির্ধারন করে নির্মানাধীন ভবনে নোটিশ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
এলাকার নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একজন বলেন একইভাবে এখানে প্রায় ৪৬ জন লোক চান্দিনা ভিটির উপর বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়েছে, তবে তাকে কেনো এককভাবে অপসারণের নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমরা চাই সকলকেই অপসারণের নোটিশ দেয়া হোক।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, সরকার জায়গায় অবৈধ দখলদারদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। শিগগিরই পুরো জেলায় সরকারি সব সম্পত্তি উদ্ধার করা হবে। কাউকে অন্যায়ভাবে সরকারি সম্পত্তি ভোগ করতে দেয়া হবে না।