তোপেজ খাঁ:
জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে মামলা ও পরিবারের ৫ সদস্যকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে আহত করা মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে মাদারীপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মজিবর রহমান ও তার পরিবার। আসামীদের প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি ও পুলিশ আসামীদের ধরতে না পারায় স্ত্রী পুত্রসহ পরিবারের সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবার করতে হচ্ছে অসহার পরিবারটির।
মামলা ও মজিবর রহমনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির কাছে একটি জমি নিয়ে আপন ভাই মোশারফ তালুকদারের সাথে বিরোধ চলছিল মজিবরের। জমি নিয়ে একটি বন্টন মামলা, ১৪৪ ধারা জারি মামলা করে। বন্টন মামলায় ই সব মামলা উপেক্ষা করে প্রতিপক্ষ বিবাদমান জমিতে ঘর করতে গেলে বাধা দেয় মজিবর রহমনের ২ ছেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আক্তার, দিদার ও আনোয়ার তালুকদারসহ ১০/১৫ জন দুই ছেলের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে কুপিয়ে আহত করে। মজিবর রহমন তার স্ত্রী ও দুই পুত্রবধু আহত দুইজনকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করে। মজিবর রহমনের পায়ে একটি কোপ লাগে আর স্ত্রীসহ দুই পুত্রবধুকে পিটিয়ে আহত করে এবং জামা কাপড় টেনে খুলে ফেলার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচিয়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। দুই ছেলে গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় কর্তব্যরত চিকিৎসক। এছাড়া একটি বাজাজ মোটর সাইকেল ভেঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। বাড়িঘর ভাংচুর করার চেষ্টা করে। চিকিৎসা শেষে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় মামলা করে। মামলা করার পর থেকেই আসামীরা মজিবর রহমানসহ পরিবারের সবাইকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করে। বিষয়টি পুলিশকে জানালেও এখন পর্যন্ত একজন আসামীও ধরতে পারেনি পুলিশ। তাই পরিবার নিয়ে আতংকে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।
মজিবর রহমান জানায়, আমরা ১৯৮৭ সালে কাদু শেখ, মানিক শেখ ও বিশাই শেখের ছেলে হাবি শেখের কাজ থেকে জমি কিনেছি। দলিল চাইলে দাতারা দলিল না দিয়ে ঘুরাতে থাকে। তাই ২০০২ সালে আদালতে মামলা করি। আদালত ঐ জমির মালিক হিসাবে আমাকে ২০০৩ ডিক্রি দেয়। আদালতের রায় অনুসারে আমি জমির মালিক। কিন্তু জমির মালিক তিনজনই মারা গেলে তাদের ওয়ারিশদের কাজ থেকে ২০০২ সালে একটি দলিল নিয়ে জমি দাবি করে। কিছুদিন আগে জোর করে জমিতে ঘর তুলতে যায়। আমি প্রথমে নিষেধ করি। আমার নিষেধ না মেনে ঘর তুলতে থাকে তাই আমি আদালতে মামলা করি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ঘর তুলতে গেলে আমি পুলিশের কাছে যাই। তারা বলে আপনারা গিয়ে বাধা দেন আমরা আসছি। এরপর আমার দুই ছেলে বাধা দিতে গেলে তাদের কোপায় ওরা। আমরা ওদের বাঁচাতে গেলে আমাদেরও মারধোর করে। এতে আহত হয়ে আমরা মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। দুই ছেলে গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করার পর থেকেই আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমাদের পঙ্গু করে দিবে, আমাদের মেরে ফেলবে। পুলিশকে জানালেও কোন লাভ হচ্ছে না। এমনকি পুলিশ আসামীদেরও ধরতে পারছে না। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা দেষিদের বিচার চাই এবং আমার জমি যেন আমার দখলে থাকে তাই চাই।
মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে আক্তার তালুকদার জানান, আমরা কাউকে মারি নাই। সকল অভিযোগ মিথ্যা।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বে মামলা হয়। এ ঘটনা আসামিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: জাহিদ হাসান
ইমেইলঃ
মোবাইল: ০১৯২৭৩০৮৬২০
Copyright © 2025 মাদারীপুর বার্তা. All rights reserved.